পুলিশের বাধায় পণ্ড বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
বিএনপি নেতাকর্মীদের বেধড়ক লাঠিপেটা করে পুলিশ। ছবি: বিজনেসইনসাইডারবিডি
ঢাকা (১৩ ফেব্রুয়ারি): পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে বিএনপির পূর্বঘোষিত সমাবেশ। শনিবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব প্রত্যাহার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রেসক্লাবে সমাবেশ করছিল। কিন্তু পূর্বঘোষিত এ সমাবেশ পুলিশের সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টার ধাওয়ায় পণ্ড হয়ে যায়।
দুপুর ১২টার দিকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্য শেষ হওয়ার পরপরই পুলিশ এসে সমাবেশকারীদের সড়ক থেকে তুলে দেয়। ফুটপাতের উপর সমাবেশ মঞ্চের সামনে এসে বক্তব্য বন্ধ করতে বলেই পুলিশ নেতাকর্মীদের বেধড়ক লাঠিপেটা শুরু করে। নেতাকর্মীরা তখন তোপখানা রোড, জাতীয় প্রেসক্লাবের ফটক ডিঙিয়ে পালাতে থাকে। বিএনপি কর্মীরাও এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। পুলিশের সঙ্গে বিএনপিকর্মীদের সংঘর্ষও হয়।
এক পর্যায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নাজিম উদ্দিন আলম প্রেস ক্লাবের ভেতরে আশ্রয় নেন। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হলে বেলা ১২টা ৫০ মিনিটে তারা বেরিয়ে আসেন।
এর আগে সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ সকাল ১০ টায় শুরুর কথা থাকলেও অনেক আগে থেকেই নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। সমাবেশকে ঘিরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রেসক্লাব এলাকাতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এর মধ্যে প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে নেতাকর্মীরা পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে তা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রূপ নেয়। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
পরে উত্তেজনা থেমে গেলে সমাবেশ শুরু করে বিএনপি। সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, জিয়াউর রহমানের বীরত্বের স্বীকৃতি বীর উত্তম খেতাব বাতিলের যে সিদ্ধান্ত সেটা আল জাজিরার ড্যামেজ কন্ট্রোলের ব্যর্থ চেষ্টা।
এ সময় বিএনপি`র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আঘাত আসলে প্রতিহত করতে হবে, পুলিশের কাজ পুলিশ করবে, তবুও আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে, অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের পক্ষে থাকার আহ্বান তিনি। লক্ষ্য অর্জনের পথে যেকোন বাধা প্রতিহত করতে লড়াই করতে হবে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তারা প্রধানমন্ত্রীর আশেপাশেই। তাদের পুরষ্কৃত করেছে সরকার। ক্ষমতার জন্য পিতার প্রতি সম্মান দেখায় নাই প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভাষণ দিয়ে নয়, যুদ্ধ করেই বীর উত্তম খেতাব পেয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়ার খেতাব নিয়ে ব্যবসা করে না বিএনপি, গর্ব করে।
ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের সভাপতি যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে, দক্ষিণের কাজী আবুল বাশার এবং উত্তরের আবদুল আলীম নকীর পরিচালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, কৃষকদলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, যুবদল মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ।