বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে ষড়যন্ত্রের পথ নিয়েছে : তথ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ
ঢাকা (১৫ ফেব্রুয়ারি): তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে মনে হয়, জনবিচ্ছিন্ন হয়ে তারা ভেতরে ভেতরে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ বিএনপি সরকারের ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের নিন্দা ও প্রতিবাদ সমাবেশ’ এ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুকে যেমন রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে দেশের শত্রুরা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছিল উল্লেখ কওে তিনি বলেন, তেমনি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকেও রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে বিএনপি ষড়যন্ত্রের পথে হাঁটছে বলেই তাদের বক্তব্যে বোঝা যায়।
বিএনপির সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘হঠাৎ করেই সরকার পতনের খবর পাওয়া যাবে’ উদ্ধৃত করে হাছান মাহমুদ বলেন, একথার দু’ধরণের ব্যাখ্যা হয়। একটি হচ্ছে, তারা ভেতওে ভেতরে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যেভাবে ষড়যন্ত্র করেছিল, আমাদের সরকারের বিরুদ্ধেও ক্রমাগত ১২ বছর ধরে নানা ধরণের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। আরেকটি হচ্ছে, তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন দৈব দুর্বিপাকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
মন্ত্রী এসময় আল-জাজিরার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনকেও এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, তাদের অসত্য বানোয়াট রিপোর্ট এই দেশ ও বিশ্বের মানুষ গ্রহণ করেনি এবং আল-জাজিরা তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে।
গুলিস্তানে পাগল নাচলেও বিএনপির সমাবেশের চেয়ে বেশি লোক জড়ো হয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, প্রেসক্লাবের সামনে কয়েকশ লোকের সমাবেশ করে বিএনপি বলে বিশাল সমাবেশ করেছে। দুই কোটি মানুষের ঢাকা শহরে কয়েকশ’ মানুষের সমাবেশ যদি বিশাল সমাবেশ হয়, তাহলে বুঝতে হবে, বিএনপি’র পৃথিবীটা ছোট হয়ে আসছে এবং তারা জনগণ থেকে কতটা বিচ্ছিন্ন।
শুরু থেকে করোনা টিকার বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারী বিএনপি নেতাদের করোনা টিকা নেয়ায় অভিনন্দন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই তারা টিকা নিয়ে সুস্থ থাকুন, কারণ আমাদের একটি শক্তিশালী বিরোধী দল দরকার।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া দেশে একটি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন করে ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। এক মাসের একটু বেশি সময়ের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এদেশের মানুষ আন্দোলন ও নির্বাচনের মাধ্যমে জবাব দিয়ে তাদের ক্ষমতা থেকে বিদায় দিয়েছিল।
এর পরপরই নির্বাচনে ২১ বছর বুকে পাথর বেঁধে আন্দোলন সংগ্রামকারী আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ১৭৫৭ সালের যে ২৩ জুন পলাশীর আ¤্রকাননে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, ১৯৪৯ সালের যে ২৩ শে জুন আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল, ১৯৯৬ সালেরও সেই ২৩ জুন ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ দেশে সরকার গঠন করে দেশের অগ্রযাত্রার সূচনা করেছিল।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, যে বিএনপির জন্মটাই ক্যান্টনমেন্টে, তার আজ বিএনপি নির্বাচন-গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলে আর তাদেও বেশিরভাগ নেতাই দলছুট, যারা ফুটবল-ক্রিকেটে বেশি অর্থের বিনিময়ে দলবদলের মতো বিএনপিতে ভিড়েছে, জিয়াউর রহমানের বিলানো ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট পেতে।
ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সংস্কৃতি সম্পাদক অসীম কুমার উকিল বক্তব্য রাখেন।