জাবিতে হল ছাড়ার নির্দেশ, শিক্ষার্থীদের ‘না’
জাবি প্রতিনিধি || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: জাবি শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নোটিশ
ঢাকা (২২ ফেব্রুয়ারি): তালা ভেঙ্গে ছাত্রাবাসে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের সোমবার সকালের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কর্তৃপক্ষ। রবিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক নোটিশ জারি করে এ নির্দেশ দিয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা হল ছাড়বেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।
জাবির নোটিশে বলা হয়, বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য সরকারি নির্দেশে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও গত বছরের ১৯ মার্চ হতে আজ পর্যন্ত ক্লাস এবং হল বন্ধ রয়েছে (তবে অনলাইন ক্লাস চালু রয়েছে)।
শনিবার সন্ধ্যায় কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী সরকারি নির্দেশ অমান্য করে কোন কোন আবাসিক হলে জোরপূর্বক প্রবেশ করে অবস্থান নিয়েছে। এ অবস্থায় জাবি কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে নিজ উদ্যোগে হল ত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাধ্য হবে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে হল না ছেড়ে আজ দুপুর ১২ টা পর্যন্ত হল খুলে দেয়ার জন্য নারী শিক্ষার্থীরা আলটিমেটাম দিয়েছেন। এর মধ্যে হল খোলা না হলে তাল ভেঙ্গে হলে ঢুকবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
হল না ছাড়ার কথা জানিয়ে স্নাতকোত্তর এক শিক্ষার্থী বলেন, হল ছাড়বো না। হল ছেড়ে কোথায় যাবো? গেরুয়াতে মার খেতে যাব? আমার যাওয়ার যায়গা নেই। প্রশাসন যে ব্যবস্থা নেয় নিক।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের থাকার সুব্যবস্থা এবং গেরুয়ার দোষীদের বিচার না করতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অফিস, কোয়ার্টার, প্রক্টর, ভিসিসহ সবার বাসায় তালা মেরে দেয়া হবে।
এর আগে, রবিবার দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা করাসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো- হলের তালা ভেঙে ভেতরে অবস্থানরত ছাত্রদের বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ অন্যান্য মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান, গেরুয়ায় অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের নিরাপদে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনা, হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ প্রদান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গেরুয়ার স্থানীয়দের সংঘর্ষের জেরে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে কয়েক দফা দাবি জানিয়ে ভিসির বাসভবনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার, আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন এবং গেরুয়ায় সীমানা প্রাচীরসহ গেট নির্মাণের দাবি মেনে নিলেও রাষ্ট্রীয় বিধিনিষেধ থাকায় শিক্ষার্থীদের হলে ওঠার দাবির সঙ্গে একমত জানায়নি।
এতে হলের তালা ভেঙে ছাত্ররা হলে অবস্থান নিলেও ছাত্রীদের হলে পুনরায় তালা লাগিয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে, গেরুয়ায় স্থানীয়রা খাবারের দোকানে খাবার সরবরাহ এবং খাবারের পার্সেল সার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছে বলে সেখানে অবস্থান নেয়া কিছু শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন।