আমাকে ‘বলির পাঁঠা’ বানানো হয়েছে: সামিয়া রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমান
ঢাকা (১ মার্চ): গবেষণা প্রবন্ধে জালিয়াতির অভিযোগে পদাবনতির শাস্তি পাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমান ন্যায়বিচার পাননি বলে দাবি করেছেন।
তিনি বলেছেন, অ্যালেক্স মার্টিন নামে যার অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে সেই নামে কেউ নেই। তাকে ষড়যন্ত্র করে অন্যায় ভাবে ফাঁসানো হয়েছে, ‘বলির পাঁঠা’ বানানো হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি চ্যাঞ্চেলর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে ও উচ্চ আদালতে যাবেন।
সোমবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সামিয়া রহমান এসব কথা বলেন। এ সময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ এবং আইনজীবী তুরিন আফরোজ উপস্থিত ছিলেন।
সামিয়া রহমান বলেন, যে অভিযোগে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, যার পরিচয় (শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল ‘ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি’র অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যালেক্স মার্টিন) দিয়ে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস থেকে চিঠি এসেছে, সেই অ্যালেক্স মার্টিন বলেই তো ওই জার্নালে কেউ নেই এবং তারা এ ধরনের চিঠি পাঠায়নি। শিকাগো জার্নালের এডিটর নিজে এটি স্বীকার করেছেন।
তিনি জার্নালের সম্পাদকের সঙ্গে তার নিজের একটি মেসেঞ্জার বার্তা বিনিময়ের স্ক্রিনশট সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেন।
সামিয়া দাবি করেন, যে লেখাটির জন্য তিনি অভিযুক্ত, সেটি তিনি লিখেননি। কোথাও পাবলিশ হওয়ার জন্য জমাও দেননি। তিনি এজন্য আরেকজন অভিযুক্ত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শাস্তি পাওয়া ক্রিমিনোলজি বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানকে দোষারোপ করেন। তিনি বলেন, বিষয়টি মারজান নিজেও ট্রাইবুনালের কাছে স্বীকার করেছে। তবুও আমাকে কেন শাস্তির আওতায় আনা হলো? এটি ষড়যন্ত্র।
সামিয়া রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘লেখাটি যে আমার নয়, সেটি জানিয়ে তৎকালীন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের কাছে লেখাটি প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছিলাম ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। ডিনের সেটি সিন্ডিকেটে তোলার কথা ছিল, কিন্তু তিনি কেন তুলেননি? বরং সাত মাস ঝুলিয়ে রেখে ২০১৭ সালে ভিসি আরেফিন স্যারকে ভিসির পদ থেকে সরানোর দুদিন পর তিনি বলেন, এবার তিনি বিষয়টি সিন্ডিকেটে তুলবেন। শিকাগো জার্নাল থেকে চিঠি এসেছে।’
সামিয়া বলেন, বলির পাঁঠা হয়েছি আমি। ট্রাইব্যুনাল নিজে বলেছে, ন্যায় বিচার হয়নি। তারা এমন সুপারিশ করেনি। সামিয়া ন্যায় বিচার পায়নি। গবেষণায় নকলের অভিযোগে পদাবনতি ষড়যন্ত্রমূলক। ক্ষমতার বলে যে যার মতো তথ্য দিচ্ছে। এগুলো মিথ্যা, বানোয়াট সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা।
২৮ জানুয়ারি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এই শিক্ষককে সহযোগী অধ্যাপক থেকে এক ধাপ নামিয়ে সহকারী অধ্যাপক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির শাস্তি হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।