প্রেসক্লাব থেকে পুলিশের ওপর হামলা অনভিপ্রেত: তথ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
ঢাকা (১ মার্চ): জাতীয় প্রেসক্লাবকে সংঘর্ষের ঢাল বানানো অপরাধের শামিল বলে উল্লেখ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘নিরপেক্ষ জাতীয় প্রতিষ্ঠান প্রেসক্লাবকে কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা বা সংঘর্ষের ঢাল হিসেবে অপব্যবহার করা কখনই উচিত নয়।’
সোমবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সিনেমা হল নির্মাণ-সংস্কারে সহজে ব্যাংক ঋণ চালু হওয়ায় তথ্যমন্ত্রীকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস, সহ-সভাপতি মিঞা আলাউদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক শরফুদ্দিন এলাহী সম্রাট, কোষাধ্যক্ষ আজগর হোসেন ও নির্বাহী সদস্য ফারুক হোসেন মানিক এসময় উপস্থিত ছিলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, প্রেসক্লাব একটি নিরপেক্ষ জাতীয় প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠান এবং সব মত ও পথের মানুষ ও সব রাজনৈতিক দলের জন্য উন্মুক্ত। সুতরাং সেখান থেকে পুলিশের ওপর হামলা খুবই অনভিপ্রেত।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রেসক্লাবকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ছাত্রদল হাজার হাজার ইটের টুকরা, পাথরের টুকরা পুলিশের ওপর নিক্ষেপ করে হামলা চালিয়েছে। প্রেসক্লাবে তো কোনো পাথর থাকে না। এগুলো আগে থেকেই সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রেসক্লাবকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এ ধরণের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা কখনই উচিত নয় এবং এটি অপরাধের শামিল। এ ধরনের ঘটনা অবশ্যই অনভিপ্রেত, দু:খজনক, অনুচিত। কেউ যাতে এভাবে প্রেসক্লাবকে অপব্যবহার করতে না পারে, সেজন্য আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্রদল গতকাল (রবিবার) দেশে একটি ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছে। একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশে একটি মহল পানিঘোলা করার চেষ্টা করছে। এ অপচেষ্টা অতীতেও হয়েছে, কোনো লাভ হয় নাই, এবারও কোনো লাভ হবে না।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গণের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোতেও এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে গ্রেপ্তার এবং শাস্তি বিধান করা হয়। তবে অবশ্যই আমিও আপনাদের মতো এই আইনের যাতে কোনো অপপ্রয়োগ না হয় সেজন্য সতর্ক থাকার পক্ষে।’
এর আগে সিনেমা হল নির্মাণ-সংস্কারে সহজে ব্যাংক ঋণ চালু হওয়ায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির পক্ষে প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস তথ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এ প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, দেশের চলচ্চিত্রশিল্পের যুগান্তকারী উন্নয়নের লক্ষ্যেই প্রকৃতপক্ষে আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি বিশেষ তহবিল গঠনের জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকেও অবহিত করি। প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। সে কারণেই আজকে একটি বিশেষ তহবিল গঠিত হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী জানান, ঋণ তারাই পাবে যারা সিনেমা হল সংস্কার করতে চায়। বন্ধ হয়ে গেছে এমন সিনেমা হল পুণরায় চালু করতে চায় অথবা নতুন সিনেমা হল বানাতে চায়। একইসঙ্গে কোনো মার্কেটের ভেতরে যদি সিনেপ্লেক্স, সিনেমা হল কেউ করতে চায় সেই ক্ষেত্রেও পাবে।
মতবিনিময়কালে সাংবাদিকরা তথ্য মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। এটি মন্ত্রিসভায় পাশ হতে হবে, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেতে হবে, সর্বশেষ রাষ্ট্রপতিরও অনুমোদন লাগবে। এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে।’