নোয়াখালীর ঘটনার বিচারে কারো পরিচয় দেখা হবে না : ওবায়দুল কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের(ফাইল ফটো)
ঢাকা (১০ মার্চ): নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জে সরকারি দলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনার বিচারে কারো পরিচয় দেখা হবে না বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যেই জড়িত থাকুক না কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়ার প্রশ্নই উঠে না।
বুধবার বিকালে নিজের সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংকালে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কোম্পানীগঞ্জে বিশৃঙ্খলার সাথে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের পরিচয় না দেখে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রাণঘাতী সংঘর্ষে একজন দলীয় কর্মী নিহতের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক অভিহিত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিহত আলাউদ্দিন ও এর আগের ঘটনায় সাংবাদিক মোজাক্কিরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। নিহত দুজনের পরিবার-পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানান।
এখানে উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত হন। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিসহ আহত হন কমপক্ষে ২৫ জন। ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই এবং বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরোধের জেরে এই সংঘর্ষ হয়।
ঘটনাটিকে অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পরিপন্থি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুলিশের আইজি, র্যাবের ডিজি, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি এবং জেলা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। আইন সমানভাবে প্রযোজ্য, ইতিমধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত অনেককে প্রেপ্তার করা হয়েছে, অভিযান চলছে।’
শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন ও অর্জনকে কারো অপকর্মের জন্য ম্লান হতে দিতে পারি না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই দুঃখজনক ঘটনার বিচার কাজ তদন্ত করে রিপোর্ট গঠনের জন্য নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, রিপোর্ট এলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বেশ কিছুদিন থেকে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট এলাকায় জনজীবন অস্থিরতা বিরাজ করছিল। সরকার এখন কঠোরভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করছে। তাই আশা করা হচ্ছে শিগগির জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে।
ওবায়দুল কাদের কোম্পানীগঞ্জের জনগণকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ধৈর্য ধারণ এবং সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে ৭ মার্চের আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় মিথ্যাচার করেছেন প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করেননি বরং জাতির সামনে ইতিহাসের প্রমাণিত সত্য তুলে ধরেছেন।’ কাদের বলেন, ‘বিএনপি কখনো সত্য শুনতে চায় না, তাই ঐতিহাসিক সত্য প্রকাশে বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে।’
জিয়াউর রহমান ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হতো না-বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যকে ‘অসত্য প্রলাপ’ আখ্যায়িত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তার এই বক্তব্যও স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতির শামিল। এ ধরনের মিথ্যাচার বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ।’
বিএনপি জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রাণান্ত অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণা আর ঘোষণা পাঠ করা এক কথা নয়। পাঠক কখনো ঘোষক হতে পারে না।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান, বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ঘোষণা পাঠকারীদের মধ্যে একজন।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমানকে দেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির জনক বলেও আখ্যায়িত করেন।