লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বোরো ধানের আবাদ বেশি: কৃষিমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সভায় বক্তব্য রাখছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক
ঢাকা(২১ মার্চ) : বোরো ধানের আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এ বছর হাইব্রিড ধানের আবাদ বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল, সেটিও লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে।
রবিবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে অনলাইনে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এ কথা বলেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম। এসময় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং সংস্থা প্রধানসহ প্রকল্প পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বড় ধরণের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ধানের উৎপাদন অনেক ভাল হবে। হাওরসহ সারা দেশের ধান সুষ্ঠুভাবে ঘরে তুলতে পারলে বোরোতে অনেক ভাল ফলন হবে। এছাড়া, শুধু ধান নয়; মাঠে অন্যান্য ফসলের উৎপাদন পরিস্থিতিও ভাল অবস্থায় আছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, এবছর বোরোতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৮ লাখ ৫ হাজার ২০০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রিড ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১১ লাখ ৪ হাজার ৬৩৩ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ১২ লাখ ১৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছর মোট আবাদ বেড়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর ও হাইব্রিডের আবাদ বেড়েছে প্রায় ৩ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে।
উল্লেখ্য, এবছর বোরো ধানের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ সহায়তা বাবদ প্রায় ১৪৫ কোটি টাকার প্রণোদনা বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ধানের চাষ বৃদ্ধিতে দেয়া হয়েছে প্রায় ৮৫ কোটি টাকার প্রণোদনা। এবছর ২ লাখ হেক্টর বেশি জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের এই ছোট দেশে জনসংখ্যা অনেক বেশি, যা ক্রমশ বাড়ছে। অন্যদিকে শিল্পায়ন, নগরায়নসহ নানা কারণে চাষের জমি দিন দিন কমছে। এই কম জমি থেকেই আমাদের মূল খাদ্য চাল উৎপাদন করতে হবে, চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। একই সাথে সকল ফসলে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে চেষ্টা করা হচ্ছে, যেটি খুবই চ্যালেঞ্জিং। ভুট্টা, আলু, শাকসবজি, তেল, ডাল ও মসলা জাতীয় ফসলের চাষ ও উৎপাদন বাড়াতে চেষ্টা চলছে। কিন্তু, জমি স্বল্পতার কারণে একটির আবাদ বাড়াতে গেলে অন্যটির কমে যায়। কাজেই, সকল ফসলের উৎপাদন অব্যাহত রাখা ও তা আরও বৃদ্ধি করতে হলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে গবেষক-বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মীসহ সকলকে আরও মনোযোগী হতে হবে।
সভায় জানানো হয়, চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৬৮টি প্রকল্পের অনুকূলে মোট ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। ছরতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি হয়েছে ৪০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। যেখানে জাতীয় গড় অগ্রগতি ৩৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ।