পুলিশকে টার্গেট করেই পরিকল্পিতভাবে হামলা-ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে: ডিবিপ্রধান
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
সংগৃহিত
নিজস্ব প্রতিবেদক: কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে পুলিশকে টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে হামলা-ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। আজ শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিবিপ্রধান।
তিনি বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত অনেকবার গণতান্ত্রিক সরকারকে অবৈধভাবে ক্ষমতাচ্যুত করা বা দেশকে অকার্যকর করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু পুলিশের কারণে তারা বার বার ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য তারা এবার পুলিশকেই টার্গেট করেছে।
তিনি বলেন, জামায়াত ও বিএনপির ক্যাডাররা কীভাবে নির্মমভাবে পিটিয়ে আমাদের দুই পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ গড়েছিল পুলিশ। পুলিশই দুর্দিনে প্রথম এগিয়ে আসে। ২৮ অক্টোবরে আমরা দেখেছি রাষ্ট্রীয় স্থাপনা, বিচারপতির বাসভবনে হামলার চিত্র। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ও আমরা দেখলাম কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও পুলিশকে টার্গেট করা হয়েছে। যাত্রাবাড়ী শনির আখড়া, রায়েরবাগ এলাকায় গিয়ে তারা পুলিশকে টার্গেট করেছে। পুলিশ মারতে পারলেই ১০ হাজার টাকাও তারা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।
হারুন বলেন, বাড়িবাড়ি তল্লাশি করেছে তারা। উদ্দেশ্য ছিল একটাই— পুলিশকে ডিমরালাইজড করা। পুলিশকে ডিমরালাইজড করতে পারলে তারা হয়ত মনে করেছিল আন্দোলন সফল হবে। পুলিশ দুর্বল হলে পিছিয়ে যাবে। তখন তারা এই রাষ্ট্রকে অকার্যকর এবং সরকারের পতন ঘটাতে পারবে মনে করেছিল। দেশ ও মানুষের জন্য পুলিশ সদস্যরা নানা সময়ে আত্মাহুতি দিয়েছি। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত পীড়াদায়ক। এই কোটা আন্দোলনে তিনজন পুলিশ সদস্যকে হারিয়েছি। কিন্তু পুলিশের মনোবল মোটেও ভাঙেনি।
ডিবিপ্রধান বলেন, যারা পুলিশকে হত্যা করেছে, সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে, স্বপ্নের মেট্রোরেলসহ সরকারি স্থাপনায় নাশকতা চালিয়েছে। যারা এসবের নেতৃত্ব দিয়েছে, অর্থ আদান-প্রদান করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তারা যেখানেই থাকুক না কেন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
এদিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, রায়েরবাজার, শনির আখড়া এলাকায় দুই পুলিশ সদস্য হত্যার ঘটনায় মাস্টারমাইন্ড হিসেবে ডেমরা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানাসহ ৬ জনকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। বাকিরা হলেন— ইরফান, আবু বক্কর, রবিউল ইসলাম, সৌরভ মিয়া ও তারেক।
এ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ডেমরা থানা ছাত্রদল আহ্বায়ক মাসুদ রানার নেতৃত্বে পুলিশ হত্যার নীল নকশা বাস্তবায়ন করা হয়। ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাসুদ রানার নেতৃত্বে ইরফান, আবু বক্কর, রবিউল ইসলাম, সৌরভ মিয়া ও তারেকসহ ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার জন্য যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগে অবস্থান করে। এ ছাড়া, মাসুদ রানার উপস্থিতি এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সহযোগিতায় ইরফান ও বক্কর আরো কয়েকটি দল নিয়ে এসে তার সঙ্গে যোগ দেয়। মাসুদ রানার নেতৃত্বে তারা রায়েরবাগ-শনির আখড়া এলাকায় অগ্নিসংযোগ এবং মসজিদের মাইকে গুজব ছড়ানো, থানা আক্রমণ এবং পুলিশ হত্যায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করে।