ভারত ও বাংলাদেশ সমগ্র বিশ্বের উন্নতি দেখতে চায়: মোদি
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ওড়াকান্দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: পিআইডি
ঢাকা (২৭ মার্চ): ভারত এবং বাংলাদেশ নিজেদের বিকাশ ও প্রগতির চেয়ে সমগ্র বিশ্বের উন্নতি দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বে বিকাশ ও পরিবর্তনের শক্তিশালী উদাহরণ। ভারত এই প্রচেষ্টায় সহযাত্রী।
শনিবার গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের মন্দিরে পুজো দিয়ে তিনি এসব এ কথা বলেন।
মোদি বলেন, “ভারত আজ সকলের সাথে, সকলের বিকাশ এবং সকলের বিশ্বাস- এই মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ এতে সহযাত্রী। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সামনে বিকাশ আর পরিবর্তনের একটি শক্তিশালী উদাহরণ পেশ করছে। সেই প্রচেষ্টায় ভারত আপনাদের সহযাত্রী।
তিনি বলেন, “আমার বিশ্বাস আছে, শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের আশীর্বাদে গুরুচাঁদ ঠাকুরের প্রেরণায় আমরা দুই দেশে একবিংশ শতকের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিজেদের লক্ষ্য পূরণ করব। ভারত এবং বাংলাদেশ উন্নতি ও প্রেমের পথে বিশ্বে পথপ্রদর্শন করতে থাকবে।”
ওড়াকান্দি মন্দিরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মতুয়াবাদের প্রবক্তা হরিচাঁদ ঠাকুর ও তার ছেলে গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পূজা দেন এবং পরে এই সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে অংশ নেন।
তিনি বলেন, “একভাবে এই স্থান ভারত ও বাংলাদেশের আত্মিক সম্পর্কের তীর্থস্থান। আজ শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের আশীর্বাদের এই পুন্যভূমিতে প্রণাম করার সৌভাগ্য হয়েছে। আমি মাথা নত করে প্রণাম জানাচ্ছি।”
মোদি বলেন, “এই দিনের এই পবিত্র মহূর্তের প্রতীক্ষা আমার বহু বছর ধরে ছিল। ২০১৫ সালে যখন আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবার বাংলাদেশে আসি, তখনই আমি এখানে আসার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলাম। আমার সেই প্রত্যাশা-কামনা আজ পূর্ণ হল। আমি নিয়মতভাবে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের অনুগামীদের থেকে ভালোবাসা ও স্নেহ পেয়েছি, পরিবারের সদস্যদের ঘনিষ্ঠতা পেয়েছি।
মোদি বলেন, “ভারত এবং বাংলাদেশ নিজেদের বিকাশ ও প্রগতির চেয়ে সমগ্র বিশ্বের উন্নতি দেখতে চায়। উভয় দেশই পৃথিবীতে অস্থিরতা, সন্ত্রাস এবং অশান্তির পরিবর্তে স্থিতিশীলতা, প্রেম এবং শান্তি চায়। এই শিক্ষাই শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর আমাদের দিয়েছেন। আজ সমগ্র বিশ্ব যে মূল্যবোধের কথা বলে, মানবতার যে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে, সেই মূল্যবোধের জন্য হরিচাঁদজী নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।”
পশ্চিমবাংলায় ঠাকুরনগর সফরে মতুয়া সম্প্রদায়ের সঙ্গে সময় কাটানোর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন মোদি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের ঠাকুরনগর থেকে বাংলাদেশের ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত একইরকমের শ্রদ্ধা রয়েছে। একইরকমের আস্থা রয়েছে। একই রকমের অনুভূতি রয়েছে।”
মোদি বলেন, “মতুয়া সম্প্রদায়ের আমার ভাই-বোন শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীর পুন্যলগ্নে প্রতিবছর বারুণী স্নান উৎসব পালন করেন। ভারত থেকে প্রচুর সংখ্যক পুন্যার্থী এই উৎসবে যোগ দেবার জন্য ওড়াকান্দি আসেন। আমার ভারতের ভাইবোনদের জন্য এই তীর্থযাত্রা যাতে আরও সহজ হয় সেজন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ওড়াকান্দিতে মোদি আরও বলেন, “আজ ভারত এবং বাংলাদেশের সামনে যে ধরণের একইরকম চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তা সমাধানের জন্য শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের অনুপ্রেরণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের একজোট হয়ে প্রত্যেকটি চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করা উচিত। এটি আমাদের কর্তব্য, দুই দেশের কোটি কোটি জনগণের কল্যাণের পথ।”