কোভিড হ্রাসে শক্তিশালী আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ফাইল ছবি
ঢাকা (৬ ডিসেম্বর): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রকোপ কমিয়ে আনতে শক্তিশালী আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন। রোববার বাংলাদেশ-ভুটান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষর এবং দুদেশের মধ্যে সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খবর ইউএনবি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি স্বাস্থ্য সংকট ছাড়িয়ে আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা ও জীবন-জীবিকার ওপর ক্রমবর্ধমান হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই অজানা শত্রুর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় ভুটান এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য প্রতিবেশীদের সাথে বাংলাদেশ দারুণ সহযোগিতা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের নতুন বাস্তবতা শিখিয়েছে, সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টার পাশাপাশি এসব বাস্তবতাও আমাদের অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কোভিড-১৯ মহামারির নতুন প্রকোপ মোকাবিলা করছে।’
পিটিএ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানকে বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসাবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের যেকোনো দেশের সাথে এই প্রথম অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করল এবং ভুটানই প্রথম দেশ যারা বাংলাদেশকে স্বাধীন এবং সার্বভৌম একটি দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। অগ্রাধিকারমূলকি এই বাণিজ্য চুক্তি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ৫০ বছর আমাদের অঞ্চলের বাসিন্দাদের টেকসই উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির সাক্ষী হবে।’ তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে সকল বাংলাদেশিদের হৃদয়ে ভুটানের জন্য একটি বিশেষ অবস্থান এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে স্থায়ী একটি স্থান রয়েছে। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভুটানের তৃতীয় রাজা এবং সেখানকার জনগণের অবিচ্ছিন্ন সমর্থনের পাশাপাশি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য তাদের দেশের স্বীকৃতি আজও আমাদেরকে আবেগতাড়িত করে’।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এখন সময় এসেছে যে পারস্পরিক সুবিধা এবং নাগরিকদের সামগ্রিক উন্নয়ন ও কল্যাণের জন্য দুই দেশই তাদের দৃঢ় সম্পর্ককে আরও অর্থবহ করে তুলবে এবং এরই ধারাবাহিকতায় উভয় দেশ আজ বাংলাদেশ-ভুটান পিটিএতে স্বাক্ষর করেছে। তিনি বলেন, ‘এই চুক্তির অধীনে, বাংলাদেশ এবং ভুটানের বিভিন্ন ধরনের পণ্য উভয় দেশের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুযোগ পেতে পরে। চুক্তিতে পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে পণ্যের অতিরিক্ত তালিকা অন্তর্ভুক্ত করারও বিধান রয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর বাংলাদেশের আরও বেশি মানুষ ভুটানের তাজা আপেল ও কমলা হাতের নাগালে পাবে এবং ভুটানের ফ্যাশন সচেতন মানুষ বাংলাদেশ থেকে ভালো মানের আরও বিভিন্ন ধরনের পোশাক বেছে নেয়ার সুযোগ পাবেন। তিনি বলেন, চতুর্থ রাজা জিগমে সিংয়ে ওয়াংচুকের দূরদর্শী নির্দেশনা ভুটানের রূপান্তর বাংলাদেশ অত্যন্ত প্রশংসার সাথে পর্যবেক্ষণ করেছে। ভুটান আজ একটি গণতান্ত্রিক, আধুনিক এবং প্রগতিশীল দেশ।
‘ভিশন ২০২১’ এবং ‘ভিশন ২০৪১’ এর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে খাদ্য ও জ্বালানী সুরক্ষা, শিক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, সমাজকল্যাণ এবং টেকসই অর্থনৈতিক বিকাশের পাশাপাশি উন্নয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং, বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, ভুটানের অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী লোকনাথ শর্মা এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন।