বাবুনগরী-মামুনুলদের রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেল পিবিআই
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: ফাইল ফটো
ঢাকা (০৭ ডিসেম্বর): বাবুনগরী-মামুনুলদের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা তদন্ত করতে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে একটি মামলার আর্জিতে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী, খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মামুনুল হক এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীমকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলায় আসামি করা হয়েছে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল সোমবার সকালে ঢাকার মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে প্রথম মামলাটি করেন। একই আদালতে দ্বিতীয় আবেদনটি করেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক।
আমিনুলের মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, ইসলামকে ‘ঢাল হিসেবে ব্যবহার’ করে আসামিরা ধর্মের ‘আজগুবি’ ব্যাখ্যা দিয়ে ‘বিদ্বেষপূর্ণ, কাল্পনিক, উত্তেজনাকর ও উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিচ্ছেন। তারা বাঙালি মুসলমান সমাজের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও সংবিধান সম্পর্কে ‘বিদ্বেষ সৃষ্টি করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছেন।
মশিউর মালেকের অপর মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, মামুনুল হক ঢাকার বিএমএ মিলনায়তনে এক আলোচনাসভায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ‘ভেঙে ফেলার হুমকি দেন’, যা দেশ ও সরকারের স্থিতিশীলতাকে ‘হুমকির মুখে’ ফেলে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৩ নভেম্বর ঢাকার গেণ্ডারিয়ার ধূপখোলার মাঠে ‘তৌহিদি জনতা ঐক্যপরিষদের’ ব্যানারে এক সমাবেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করা হয়। এতে বক্তৃতা করেন ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা ফয়জুল করীম।
একই দিনে রাজধানীর বিএমএ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে শানে রিসালাত কনফারেন্সে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মামুনুল হক প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করেন।
এর পর গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক মাহফিলে অংশ নিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী হুমকি দেন, যে কোনো দল ভাস্কর্য বসালে তা ‘টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেয়া’ হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মধ্যে শুক্রবার রাতের কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জড়িত স্থানীয় মাদ্রাসার দুই ছাত্র ও দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মো. জিশান মাহমুদ রবিবার জুনাইদ বাবুনগরী ও মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আরেকটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।