জলবায়ু পরিবর্তন প্রকল্পে প্রতি বছর ৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছি: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (১২ ডিসেম্বর): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘প্রতি বছর আমরা জলবায়ু পরিবর্তন সংবেদনশীল প্রকল্পের জন্য ২ বিলিয়ন ডলার এবং অভিযোজন ব্যবস্থার জন্য ৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছি।’ শনিবার প্যারিস চুক্তির পঞ্চম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। খবর বাসস।
যুক্তরাজ্য, জাতিসংঘ ও ফ্রান্স যৌথভাবে চিলি ও ইতালির অংশীদার সহযোগিতায় এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাসতিয়ান পিনেরাঁ ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী গিউসিপে কোঁত উদ্বোধনী ভাষণের মাধ্যমে সম্মেলন শুরু হয়।
পূর্বে ধারণকরা ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এনডিসি এবং অভিযোজন উচ্চাভিলাষকে যথেষ্ট পরিমাণে বাড়াতে আমরা বিপর্যয় প্রশমন প্রক্রিয়াতে বিদ্যমান জ্বালানি শক্তি, শিল্প ও পরিবহন খাত ছাড়াও আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাত অন্তর্ভুক্ত করেছি। আমরা আমাদের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করছি।’
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূলতা মোকাবেলায় জলবায়ু তহবিলের পাশাপাশি কাঙ্খিত এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিপর্যয় প্রশমন ব্যবস্থা নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমি সব উন্নত দেশকে জলবায়ু তহবিলসহ কাঙ্খিত এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিপর্যয় প্রশমন ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাতে চাই’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমরা ঐতিহাসিক প্যারিস চুক্তির পঞ্চম বর্ষ উদযাপন করছি। দুর্ভাগ্যক্রমে চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত লক্ষ্যের ধারে কাছেও আমরা পৌঁছাতে পারিনি।’ তিনি বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রতিকূলতা আমাদের নিস্ক্রিয়তার জন্য থেমেও থাকছে না, বিপর্যয় থেকে আমাদের রেহাইও দিচ্ছে না।
অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ অভিযোজন ব্যবস্থায় বিশে^ নেতৃস্থানীয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই বিষয়ে, আমি সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে, অভিযোজন করার সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’
জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরামের সভাপতি হিসাবে শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক দেশকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতের মধ্যে বর্ধিত এনডিসি ঘোষণা দেওয়ার আহ্বানের মাধ্যমেই তারা জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরামের ‘মিডনাইট সারভাইবাল ডেডলাইন ফর দ্য ক্লাইমেট’ উদ্যোগটি চালু করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে দেশব্যাপী ১১.৫ মিলিয়ন গাছের চারা রোপণ করা হচ্ছে এবং সুরক্ষিত টেকসই ভবিষ্যতের জন্য সম্পদ জড়ো করতে ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ নামে একটি কর্মসূচিও চালু করেছেন।
অন্যান্যের মধ্যে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদ সুগা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ইটালির মন্ত্রী পরিষদের প্রেসিডেন্ট সেলিনা নেইরোক লীম, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা, বারবাডোসের প্রধানমন্ত্রী হোন মিয়া মোটলি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এ উপলক্ষ্যে ভাষণ দেন। এছাড়া, ইউরোপীয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডের লেয়েনও অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন।