গুগলের ডুডলে মুনীর চৌধুরী
|| বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (২৭ নভেম্বর): শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্যসমালোচক ও শহীদ বুদ্ধিজিবী মুনীর চৌধুরীর আজ ৯৫তম জন্মদিন। তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে সার্চ ইঞ্জিন গুগল ডুডল প্রকাশ করেছে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় ডুডলটি প্রকাশ করে এই সার্চ জায়ান্ট। সেখানে সার্চ বারের ওপরে জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিশেষ ডিজাইনে করা গুগলের লেখার মাঝখানে খোলা বই হাতে শাল জড়ানো ও মোটা ফ্রেমের চমশা পরা মুনীর চৌধুরীর একটি ছবি শোভা পাচ্ছে। এই ছবির ওপর ক্লিক করলে সরাসরি সার্চ অপশনে মুনীর চৌধুরীর নানাবিধ তথ্যের লিঙ্ক চলে আসছে।
মুনীর চৌধুরীর জন্ম ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার মানিকগঞ্জে। মা বাবার চৌদ্দ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন তিনি। বাবা আব্দুল হালিম চৌধুরী তখন মানিকগঞ্জের এস ডি ও। অবশ্য হালিম চৌধুরীর পৈত্রিক বাড়ি নোয়াখালী জেলায় রামগঞ্জ থানার গোপাইরবাগ গ্রামে।
১৯৪১ সালে মুনীর চৌধুরী ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকেই প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। ১৯৪৬ ও ১৯৪৭ সালে তিনি দ্বিতীয় বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯৫২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারী জননিরাপত্তা আইনে দ্বিতীয়বারের মত গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা অবস্থাতেই মুনীর চৌধুরী রচনা করেন তার বিখ্যাত কবর নাটকটি। ১৯৫৩ এবং ১৯৫৪ সালে বাংলায় এম.এ. প্রথম পর্ব ও দ্বিতীয় পর্ব পরীক্ষা দিয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
১৯৪৮ সালে মুনীর চৌধুরী প্রগতি লেখক ও শিল্পী সংঘের সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং এই বছরেই তিনি কলকাতায় অনুষ্ঠিত কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনে যোগ দেন। ১৯৪৯ সালে মুনীর চৌধুরী খুলনার দৌলতপুর ব্রজলাল কলেজের ইংরেজির অধ্যাপক হয়ে খুলনায় চলে যান। আধুনিক, শিক্ষিত ও শিল্পী লিলি চৌধুরীকে বিয়ে করে অধ্যাপনার পাশাপাশি সংসার জীবনও শুরু করেন এ বছরেই।
মুনীর চৌধুরী রচিত ‘কবর’ নাটকটি-ই ভাষা আন্দোলনের একমাত্র নাট্য দলিল। তিনি নাটকটি লেখা শেষ করেছিলেন ১৯৫৩ সালের ১৭ জানুয়ারি আর জেলখানায় এটি মঞ্চস্থ হয়েছিল ২১ ফেব্রুয়ারি। নির্দেশনা দিয়েছিলেন ফণী চক্রবর্তী।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর মুখশধারী আলবদর বাহিনী তাকে খাবার টেবিল থেকে জরুরি মিটিংয়ের কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। সেই যাওয়াই ছিল তার শেষ যাওয়া। আর ফিরে আসেননি বাংলা সাহিত্যের অনন্য অসাধারণ এই প্রতিভাবান।
কবর নাটক ছাড়াও মুনীর চৌধুরী রক্তাক্ত প্রান্তর (১৯৬২), চিঠি (১৯৬৬), দন্ডকারণ্য (১৯৬৫), পলাশী ব্যারাক ও অন্যান্য (১৯৬৯); অনুবাদ নাটক-কেউ কিছু বলতে পারে না (১৯৬৭), রূপার কৌটা (১৯৬৯), মুখরা রমণী বশীকরণ (১৯৭০); প্রবন্ধগ্রন্থ- ডাইড্রেন ও ডি. এল. রায় (১৯৬৩), মীরমানস (১৯৬৫), তুলনামূলক সমালোচনা (১৯৬৯), বাংলা গদ্যরীতি (১৯৭০) ইত্যাদি গ্রন্থসমূহ রচনা করে গেছেন। যা তাকে অমর করে রেখেছে বাঙ্গালির চেতনায়।