বীরত্ব দেখিয়ে চাকরি হারাচ্ছেন ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ের হামলাকারীরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ে ডাইরেক্ট মার্কেটিং কোম্পানি নাভিস্টারের কর্মী। ছবি: সিএনএন
ঢাকা (৮ জানুয়ারি): যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডবের চিত্র গণমাধ্যম তথা সামাজিক মাধ্যমের কল্যাণে সারা বিশ্ব দেখেছে। সেখানে বীরত্ব দেখাতে গিয়ে এখন অনেকে কর্মস্থলে অবাঞ্চিত বলে চিহ্নিত হচ্ছেন। হারাচ্ছেন চাকরি। সামাজিক মাধ্যমে তাদের ছবি দেখেই তাদের চিহ্নিত করার মাধ্যমে এ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে সিএনএন শুক্রবার এক রিপোর্টে জানিয়েছে।
মেরিল্যান্ডর ডাইরেক্ট মার্কেটিং কোম্পানি নাভিস্টার এক ঘোষণায় বলেছে, ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ে কোম্পানির আইডিসহ এক কর্মীর ছবি প্রকাশিত হবার পর তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, আমরা সব কর্মকর্তা-কর্মচারির শান্তিপূর্ণ এবং আইনমেনে বাক স্বাধীনতার অধিকারকে সমর্থন করি। কিন্তু কোম্পানির কোন সদস্য যদি এমন কোন আচরণ করেন, যা অন্যের স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে তিনি আর নাভিস্টার ডাইরেক্ট মার্কিটিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবেন না।
পল ডেভিস নামের টেক্সাসের এক অ্যাটর্নীও আর গুজহেড ইন্সুরেন্সে বহাল নেই। তারও সেই একই অপরাধ। সামাজিক মাধ্যমে তাকে ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ে তাণ্ডবে অংশ নিতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে তিনি একটি ভিডিও ফুটেজে কথাও বলেছেন। তাতে তিনি বলেছেন, আমরা সবাই এসব বন্ধ করতে ক্যাপিটালে ঢোকার চেষ্টা করছি। শান্তপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, আমি বলেছিল ক্যাপিটালে ঢোকার চেষ্টা করছি। এর অর্থ হচ্ছে সেখানে আমরা জোড় করে ঢুকছি না। আমরা মৌখিক প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলাম। কোন ধরণের সহিংসতার উদ্দেশ্য আমাদের ছিল না।
পরে বৃহস্পতিবার টেক্সাস ভিত্তিক ওয়েস্টলেক কোম্পানি টুইটারে জানিয়ে দেয়, অ্যাসোসিয়েট জেনারেল কাউন্সেল পল ডেভিস আর গুসহেডের কেউ নন। গুসহেডের যেসব কর্মচারি ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ের ঘটনায় জড়িত ছিলেন তারা আর গুসহেডের কেউ নন।
পেনলিভেনিয়ার সাবেক রাজ্য প্রতিনিধি রিক স্যাকন ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ের বাইরে অবস্থান অবস্থার একটি ছবি নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। এরপর পরই সেন্ট ভনসেন্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ তার বিষয়টি তদন্ত করতে শুরু করে। ওই কলেজে তিনি অতিরিক্ত অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তদন্ত শুরুর পরই ড. স্যাকন পদত্যাগপত্র জমা দেন। কর্তৃপক্ষও কাল বিলম্ব না করে তাৎক্ষণিক ভাবে কার্যকর তার পদত্যাগপত্র গ্রহন করে।
পেনসিলভেনিয়ার ট্রিবিউন রিভিউকে স্যাকন বলেছেন, কলেজের ভালোর জন্যই আমি সেখান থেকে পদত্যাগ করেছি। সেখানে আমি ২১ বছর কাজ করেছি। আমি চাই না আমার কারণে কলেজকে নিয়ে মিডিয়াতে লেখালিখি হোক। তাই আমি পদত্যাগ করাটাই শ্রেয় মনে করেছি।
স্যাকন ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ে অবস্থানকরা অবস্থায় একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। পরে অবশ্য তিনি সেটি সরিয়ে ফেলেন। তবে পেনসিলভেনিয়ার স্টেট সিনেটর লিন্ডসে ইউলিয়াম সেই ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে স্যাকন বলছেন, তারা গেট ভেঙ্গে ফেলেছে। যারা আমাদের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে সেই সব দুস্কৃতকারীদের আমরা সেখান থেকে বের করে দেব।
ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ের হামলাকে সমর্থন করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় টেক্সাস রিপাবলিকান পার্টির নেতা ওয়াল্টার ওয়েস্টকেও তার পদ থেকে সেিয় দেয়া হয়েছে। তিনি লিখেছিলেন আমেরিকায় ক্ষমতায় থেকে যারা সহিংসতাকে সমর্থন করে তাদেরকেও শিক্ষা দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা জোড়ালো ভাবে মানুষের বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। তবে ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ে যে সহিংসতা হয়েছে সেটার নিন্দা জানাই। টেক্সাস সব সময় আইন শৃংখলার পক্ষে ছিল এবং সব সময় তাই থাকবে।
এরপর এক বিৃবতিতে ওয়াল্টার ওয়েস্ট ফেসবুকে লিখেছেন, ফেসবুকে তার দেয়া বক্তব্যকে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনি কখনো ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ে সহিংসতাকে সমর্থন করেননি।