ইন্দোনেশিয়ায় বোয়িং ৭৩৭ বিমান বিধ্বস্তের স্থান চিহ্নিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
বিমানের ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রাপ্ত নানা জিনিসপত্র। ছবি: বিবিসি
ঢাকা (১০ জানুয়ারি): ইন্দোনেশিয়ায় বোয়িং ৭৩৭ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার স্থানটি কর্তৃপক্ষ চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। শনিবার রাজধানী জাকার্তার বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিমানটি সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছিল। খবর বিবিসি।
শ্রীবিজয় এয়ারের বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি দুই পাইলটসহ ৬২জন লোক নিয়ে রাজধানীর সুকর্ন-হাত্তা ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে পশ্চিম কালিমান্তান প্রদেশের পন্টিয়ানাকে যাচ্ছিল। কিন্তু যাত্রা শুরুর চার মিনিট পরই বিমানের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
রোববার বিমানের রেকর্ডার থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের মাধ্যমে সেটি চিহ্নিত করা হয়। স্থান চিহ্নিত হবার পর সেখানে নেভি ডাইভারসহ ১০টির বেশি জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এজেন্সির প্রধান বাগুস পুরোহিতো বলেছেন, দুটি পয়েন্ট থেকে আমরা সিগন্যাল চিহ্নিত করেছি। বিধ্বস্ত বিমানের ব্ল্যাকবক্স থেকেই হয়তো সিগন্যাগুলো পাওয়া গেছে।
তদন্ত কর্মকর্তারা বিমানের ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রাপ্ত নানা জিনিসপত্রও পরীক্ষা করে দেখছেন। জাকার্তা পুলিশের একজন মুখপাত্র ইসরি ইউনুস বলেছেন, সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এজেন্সি থেকে দুটি ব্যাগ পাওয়া গেছে। ওই ব্যাগের একটিতে যাত্রীদের কিছু জিনিসপত্র রয়েছে। অন্যটিতে মানুষের শরীরের কিছু অংশ রয়েছে। এসব কিছুই আমরা এখন পরীক্ষা করে দেখছি।
রাতে তল্লাশি সাগরে অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছিল। রোববার ভোরে এ অভিযান আবার শুরু করা হয়েছে। তল্লাশি অভিযান জোড়দার করতে চারটি বিমানও যুক্ত করা হয়েছে।
পরিবহন মন্ত্রনালয় জানিয়েছে, শ্রীবিজয় এয়ারের বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি রাজধানীর সুকর্ন-হাত্তা ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর ২টা ৩৬ মিনিটে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু যাত্রা শুরুর চার মিনিট পরই ২টা ৪০ মিনিটে বিমানের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
জাকার্তা এবং বোর্নিও দ্বীপের কালিমান্তান প্রদেশের মধ্যে জাভা সাগরের উপর দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে সাধারণত বিমানে ৯০ মিনিট সময় লাগে। বিমানটি উড্ডয়নের পর কোন ধরণের বিপদ সংকেত দেয়নি বলে জানিয়েছেন এয়ার মার্মাল বাগুস পুরোহিতো।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইট ট্রেডার টুয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে বোয়িং বি৭৫৭-৫০০ বিমানটি উড্ডয়নের মাত্র চার মিনিট পর ৬০ সেকেন্ডের কম সময়ের মধ্যে প্রায় ১১,০০০ ফিট উপর থেকে পড়ে সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরাও জানিয়ছেন, তারা কমপক্ষে একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। সোলিহিন নামে এক জেলে বিবিসি ইন্দোনেশিয়ান সার্ভিসকে জানিয়েছেন, তিনি একটি বিমান বিধ্বস্ত হতে দেখেছেন। সে ঘটনার পর সাগর থেকে তার ক্যাপ্টেন তীরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
সোলিহিন বলেন, বিমানটি যেন বজ্রপাতের মতো সাগরে পড়ার পর পানিতে বিস্ফোরিত হলো। ঘটনাটি আমাদের খুব কাছেই ঘটেছে। বিমানের ধ্বংসাবশেষের একটি প্লাইউড এসে আমাদের নৌকাতেও আঘাত করেছিল।
যে স্থানে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, তারা এমন কিছু জিনিসপত্র ভাসতে দেখেছেন যেগুলো সেই বিমানের হতে পারে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৩০ জনের ধারণ ক্ষমতার বিমানটিতে থাকা ৬২ জনের সবার মৃত্যু হয়েছে বলে আশংকা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে ৬ শিশু চার নবজাতকসহ ৫০ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু ছিলেন।