দ্বিতীয় দফা অভিশংসিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
ভোটের পর অভিশংসনের আর্টকেলে স্বাক্ষর করেন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ডেমোক্র্যাট নেতা ন্যান্সি পেলোসি। ছবি: আল জাজিরা
ঢাকা (১৪ জানুয়ারি): মার্কিন কংগ্রেস ভবনে নজিরবিহীন হামলায় উস্কানি দেয়ার জেরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিশংসন (ইমপিচমেন্ট) করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের আইনপ্রণেতারা। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই প্রথম কোন প্রেসিডেন্টকে দ্বিতীয় দফা অভিশংসন করা হলো। খবর বিবিসি, সিএনএন, আল জাজিরা।
বুধবার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ট্রাম্পকে বিদায় করতে অভিংশনের প্রস্তাব পাস হয় কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে। ৪৩৫ সদস্যের প্রতিনিধি পরিষদে ২৩২-১৯৭ ভোটে প্রস্তাবটি পাস করা হয়। এরপর উচ্চকক্ষ সিনেটে পাস হলেই মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগেই অসম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে হবে ট্রাম্পকে।
ডেমোক্র্যেটিক পার্টির আনা এই প্রস্তাবে সমর্থন দেন ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির বেশ কিছু আইনপ্রণেতাও। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির মেয়ে লিজ চেনিসহ ১০ জন রিপাবলিকান নেতা এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন।
ভোটের পর অভিশংসনের আর্টকেলে স্বাক্ষর করে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ডেমোক্র্যাট নেতা ন্যান্সি পেলোসি বলেন, ‘আজ হাউজের দুই দলই দেখিয়ে দিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলেও, আইনের উর্ধ্বে কেউ নন। ইতিহাসকে এড়িয়ে যেতে আমরা পারি না। আমরা দেখেছি, প্রেসিডেন্ট দাঙ্গায়, সশস্ত্র বিদ্রোহে উসকানি দিয়েছেন। তাকে (ট্রাম্প) যেতেই হবে। তিনি জাতির জন্য স্পষ্ট ও জাজ্বল্যমান এক হুমকি।’
এর বিরোধিতায় রিপাবলিকান নেতারা এই অভিশংসন প্রস্তাবকে ডেমোক্র্যাটদের বাড়াবাড়ি বলে মন্তব্য করেন। তারা বলেন, সহিংসতা নিয়ে এখন উচ্চকণ্ঠ হলেও সম্প্রতি বর্ণ বিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীরা সহিংস বিক্ষোভ করলেও তখন ডেমোক্র্যাটরা কোনো মন্তব্য করেনি।
এখন ১০০ সদস্যের সিনেটে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলে প্রেসিডেন্ট ছাড়তে বাধ্য হবেন ট্রাম্প। সেখানে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানরা আছেন সমান অবস্থানে। এদের মধ্যে অনেক রিপাবলিকান ক্যাপিটলে হামলার ঘটনায় ট্রাম্পের ওপর ক্ষুব্ধ।
৬ জানুয়ারি কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে ‘সহিংস বিদ্রোহে’ উসকানি দেওয়ার জন্য দায়ী করে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রস্তাবটি পাস হয় প্রতিনিধি পরিষদে।
এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো অভিংশনের মুখে পড়লেন ট্রাম্প। ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে ২০২০ সালে তার বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রস্তাব পাস হয়েছিল প্রতিনিধি পরিষদে। তবে সিনেটের ভোটাভুটিতে সেটি তখন বাতিল হয়ে গিয়েছিল।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যাটের জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। ২০ জানুয়ারি তিনি হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব নেবেন। এর মধ্যে অভিশংসন প্রক্রিয়া শেষ না হয় তাহলে ভবিষ্যতে আর কখনো ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না।
গত সপ্তাহের কংগ্রেস ভবনে অধিবেশন চলাকালীন হামলা চালিয়েছিল ট্রাম্পের উগ্রবাদী সমর্থকেরা। এতে পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনাকে মার্কিন ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দিতে ওই অধিবেশন বসেছিল। হামলার ঘটনার পর ফের বসা অধিবেশনে বাইডেনকে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেন আইনপ্রণেতারা।