মায়ানমারে হত্যার মহোৎসব চালানো হচ্ছে: অ্যামনেস্টি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: পুলিশের কবল থেকে পালাতে ব্যস্ত মায়ানমারের বিক্ষোভকারীরা
ঢাকা (১১ মার্চ): মায়ানমারে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর ‘রণক্ষেত্রের অস্ত্র’ ব্যবহার করছে জান্তা সরকার। পূর্ব পরিকল্পিত হামলার মাধ্যমে তাদের কমান্ডিং অফিসারদের মাধ্যমে সেখানে হত্যার মহোৎসব চালানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার এমনটাই দাবি করেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। খবর স্কাই নিউজ, এএফপি।
‘দেশজুড়ে হত্যার মহোৎসব’ নামে অপরাধের প্রমাণ হিসেবে সামাজিকমাধ্যমে গ্রাফিক ভিডিও ক্লিপ পোস্ট করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
অ্যামনেস্টি বলছে, বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গেছে যে, ‘তাৎমাদাও’ বলে পরিচিত মায়ানমারের সেনাসদস্যরা ভারী অস্ত্রে সজ্জিত। সেনা সদস্যদের সেই সাজসজ্জা কেবল যুদ্ধ ক্ষেত্রের জন্যই প্রযোজ্য। জনবিক্ষোভ দমনের জন্য নয়। অ্যামনেস্টি আরো বলেছে, ভিডিও ফুটেজের নানা ঘটনা দেখে বোঝা যায় পূর্ব পরিকল্পিত এবং সুষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে সেনাসদস্যরা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে।
অ্যামনেস্টির সংকটকালীন পদক্ষেপের পরিচালক জোয়ান্নি ম্যারিনার বলেন, মায়ানমার সেনাবাহিনীর এই কৌশল কোনোভাবেই নতুন নয়। কিন্তু তাদের হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ সামাজিক মাধ্যমে এর আগে কখনো দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, এগুলোই সর্বাত্মক সিদ্ধান্ত না, একেবারে নজিরবিহীন। কমান্ডাররা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন। তাদের বাহিনী ও খুনে পদ্ধতিকে প্রকাশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে।
২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরের ৫৫টি ভিডিও বিশ্লেষণ করেছে অ্যামনেস্টি। ডাওয়েই, মান্ডালে, মাওলামাইন, মনিওয়া, মায়েক, মাইটকিনা এবং ইয়াঙ্গুনের সাধারণ জনগণ এবং স্থানীয় গণমাধ্যম থেকে এসব ভিডিও সংগ্রহ করা হয়েছে।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে ২ মার্চ ইয়াঙ্গুনের শহরতলী স্যাংচুয়াংয়ে স্নাইপার রাইফেল হাতে একজন সেনার পেছনে একজন কমান্ডার দাঁড়িয়ে আছেন। ওই কমান্ডার সেনাসদস্যকে বিক্ষোভকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালানোর নির্দেশ দিচ্ছেন।
দাওয়াই শহরের আরেকটি একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক সেনা নিজের রাইফেলটি তার পাশের পুলিশ কর্মকর্তাকে দিচ্ছে। পুলিশ রাইফেলটি নিয়ে গুলি করে। রাস্তার পাশের একটি ভবন থেকে ভিডিও রেকর্ড করা হয়। অডিওতে এক নারীকে ফোঁপাতে শোনা গেছে।
এ সময় আশপাশে উপস্থিত কর্মকর্তাদের উল্লাস করতে দেখা গেছে। ম্যারিনার বলেন, এই ঘটনা বলে দিচ্ছে, তারা কেবল বেপরোয়াভাবে মানুষের জীবনকে অগ্রাহ্যই করছে না, বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি করে উল্লাস প্রকাশ করছে।
এই হত্যার মহোৎসবে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো মধ্যে সমন্বয় রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।