পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফায় ভোটগ্রহণ চলছে
ডেস্ক রিপোর্ট || বিজনেস ইনসাইডার
পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফায় ভোটগ্রহণ চলছে। ছবি: আনন্দবাজার পত্রিকা
ঢাকা (২৭ মার্চ): পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফায় ৩০ আসনে ভোটগ্রহণ চলছে। ৫টি জেলার মধ্যে শনিবার ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়ার সব কটি আসনেই ভোটগ্রহণ চলছে। বাকি ৩ জেলায় আংশিক। পুরুলিয়ায় ভোটগ্রহণ হচ্ছে জেলার ৯টি আসনেই। এ ছাড়া পশ্চিম মেদিনীপুরের ৬টি এবং পূর্ব মেদিনীপুরের ৭টি আসনে ভোটগ্রহণ চলছে। এ ছাড়াও ভোটগ্রহণ হচ্ছে বাঁকুড়ার চারটি আসনে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা।
প্রতিবেদনে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, সকাল থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আগেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে পটাশপুর ও খেজুরিতে। খেজুরির বটতলা এলাকায় বোমাবজির অভিযোগ ওঠে। বিজেপি কর্মীরা অভিযোগ করেন, তাঁদের মারধর করেছে তৃণমূল। খেজুরির একনম্বর ব্লকের বীরবন্দ এলাকায় তৃণমূল বুথ কর্মীকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি-র বিরুদ্ধে।
শালবনিতে সংযুক্ত মোর্চা প্রার্থী সুশান্ত ঘোষ অভিযোগ করেন, শুইমাদহ স্কুলের বুথে মোর্চার এজেন্টদের বসতে দেওয়া হচ্ছে না। তাই নিয়ে তৃণমূলের বুথকর্মীদের সঙ্গে বচসা বাধে সুশান্তর। আক্রান্ত হয় সংবাদ মাধ্যমও। কাঁথি দক্ষিণের মাজিনায় বেলা ন’টার কিছু ক্ষণ পরে বন্ধ করে হয় ভোট। ইভিএম নিয়ে অভিযোগ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। ভোটকর্মীরা জানান, সাধারণ মানুষের বিক্ষোভের জেরে সাময়িক ভাবে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, ভোট শুরুর আগে উত্তপ্ত কেশিয়াড়ি বিধানসভার বেগমপুর এলাকা। বিজেপি-র নির্বাচনী কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেখানেই পরে উদ্ধার করা হয় এক বিজেপি কর্মীর দেহ। মৃত্যু নিয়ে উঠছে নানারকম অভিযোগ। ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে কমিশন। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। কেশিয়াড়ী বিধানসভার অর্জ্জুনগেড়িয়া ২২১ নং বুথে ইভিএম মেশিন খারাপ থাকায় ভোট বন্ধ হয় সকাল থেকেই।
শাবড়া বাপুজি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০০ মিটারের মধ্যে জমায়েতের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে একাধিক অভিযোগ এসেছে। মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের একাধিক বুধে সিআরপিএফের বিরুদ্ধে ভোটদান প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ এসেছে। গড়বেতা বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি কর্মীরা ঢুকে পড়েছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের পক্ষ থেকে টুইট করে বলা হয়েছে কেন হঠাৎ ভোটের শতাংশ বেড়ে গেল।
নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুসারে সকাল ১১.৪১ পর্যন্ত বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর ও পুরুলিয়ায় ভোট পড়েছে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশের মতো। সকাল ১১.৪১ পর্যন্ত রাজ্যে ভোট পড়েছে ৩৬.০৯ শতাংশ।
রাজনৈতিক হিসেবে প্রথম দফার ৩০টি আসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই আসনগুলির মধ্যে ২০১৬ সালের নির্বাচনে একটিও আসন পায়নি বিজেপি। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে ২০টিতে এগিয়ে রয়েছে গেরুয়া শিবির। গত বিধানসভা নির্বাচনে পুরুলিয়ার বান্দোয়ান, বলরামপুর, জয়পুর, মানবাজার, কাশীপুর, পাড়া এবং রঘুনাথপুর এই সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রেই জিতেছিল তৃণমূল। কংগ্রেস জিতেছিল বাঘমুণ্ডি এবং পুরুলিয়া কেন্দ্র দুটি। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে দেখা যায়, একমাত্র মানবাজার ছাড়া বাকি সব বিধানসভা কেন্দ্রেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। একই ভাবে, ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন, কেশিয়াড়ি, খড়্গপুর, গড়বেতা, শালবনি এবং মেদিনীপুর সব কটি কেন্দ্রে তৃণমূল জয়লাভ করলেও ২০১৯-এ খড়্গপুর এবং শালবনি ছাড়া বাকি কেন্দ্রগুলিতে বিজেপি এগিয়ে ছিল
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ার শালতোড়া, রানিবাঁধ এবং রাইপুরে জয়লাভ করে তৃণমূল। ছাতনায় জেতে বাম শরিক আরএসপি। ২০১৯-এ তাদের সকলকে ছাপিয়ে ওই চারটি কেন্দ্রেই এগিয়ে যায় বিজেপি। ২০১৬-য় পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর, কাঁথি উত্তর, কাঁথি দক্ষিণ, ভগবানপুর, খেজুরি, রামনগর এবং এগরায় জয়লাভ করে তৃণমূল। আবার ২০১৯-এ এর মধ্যে শুধুমাত্র এগরাতেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। কিন্তু তখন শুভেন্দু অধিকারী ছিলেন তৃণমূলে। এখন তিনি বিজেপি-তে। ২০১৬ সালে ঝাড়গ্রামের বিনপুর, নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর এবং ঝাড়গ্রাম এই চার বিধানসভা কেন্দ্রেই জয়লাভ করে তৃণমূল। ২০১৯-এ একমাত্র বিনপুর ছাড়া বাকি তিনটি কেন্দ্রেই এগিয়ে যায় বিজেপি।