ইমরান খানকে সামরিক আইনে বিচারের ইঙ্গিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: || বিজনেস ইনসাইডার
সংগৃহিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা ইমরান খানকে সামরিক আইনে বিচার করার ইঙ্গিত দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। সেই সঙ্গে সতর্ক করে বলেছে, ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ব্যবহার করলে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ডনের প্রতিবেদন মতে, বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাওয়ালপিন্ডিতে ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্স কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেন, সামরিক আইনে বলা আছে, কেউ যদি এই আইনের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবহার করেন কিংবা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে তার বিরুদ্ধে এই আইনে ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে আহমেদ শরিফ চৌধুরীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, ইমরান খানকে সামরিক আইনে বিচারের মুখোমুখি করার সম্ভাবনা আছে কি না। তবে প্রশ্নটি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন এই সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এটা আদালতের বিবেচনার বিষয়। সাংবাদিকের এ ধরনের প্রশ্নকে তিনি পূর্বানুমান বলে উল্লেখ করেন।
তবে কোন পরিস্থিতিতে সামরিক আইনের আওতায় বেসামরিক ব্যক্তির বিচার করা যেতে পারে, তা উল্লেখ করেন এই সেনা কর্মকর্তা।
সামরিক আইনের আওতায় ইমরান খানকে বিচারের মুখোমুখি করা হতে পারে বলে দীর্ঘদিন ধরে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সম্ভাব্য কোর্ট মার্শাল ঠেকাতে তিনি ইসলামাবাদ হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চাওয়ার পর এ গুঞ্জন আরও জোরালো হয়ে ওঠে।
গত বছরের ৯ মের সহিংসতার ঘটনায় সামরিক আইনে বিচারের মুখোমুখি করার আশঙ্কায় ইমরান খান ওই আবেদন করেন। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে এফআইআর হয়েছে।
গত মাসে পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) সাবেক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচনা করা হয়। ইমরান খানই তাকে আইএসআইয়ের প্রধান করেছিলেন।
ফয়েজ হামিদ গ্রেফতার হওয়ার পর ইমরান খানের উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। এমন গুঞ্জন আছে যে তার বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হতে পারেন ফয়েজ হামিদ। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের আইনবিষয়ক মুখপাত্র আকিল মালিকও বলেছেন, পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্ট, ১৯৫২-এর আওতায় ইমরানের বিচার হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের তিন বছরের মাথায় পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান। এরপর তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দায়ের করা হয়।
এর মধ্যে এক দুর্নীতি মামলায় গত মে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের জেরে ৯ মে পাকিস্তানজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ওই দিন সরকারি বিভিন্ন ভবনের পাশাপাশি বেশ কিছু সামরিক স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এসব ঘটনার জন্য ইমরান খান ও তার দলের নেতাকর্মীদের দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সরকার। সেই সঙ্গে পিটিআই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক গ্রেফতার অভিযান শুরু হয়।