রোহিঙ্গা সংকট আসিয়ানের দুর্বলতার প্রকাশ: রিপোর্ট
বিআই ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: আল-জাজিরা
ঢাকা(২০ অক্টোবর): মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট এসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশন্স (আসিয়ান) এর দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ বলে এক রিপোর্ট উল্লেখ করা হয়েছে। মঙ্গলবার আসিয়ানের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে নেতৃত্বের শূণ্যতা এবং ১০ সদস্যের এ সংস্থা রোহিঙ্গাদের মানাবধিকার লংঘণের বিষয়টি ঠিকমতো মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
আসিয়ান পার্লামেন্টেরিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস (এপিএইচআর) রিপোর্টে বলেছে, নিজস্ব প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামোর কারণেই আসিয়ানের কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। সেই অবকাঠামোই আসিয়ানকে এর সদস্যদেশ মিয়ানমারে হস্তক্ষেপ করার সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। জাকার্তায় আসিয়ানের সচিবালয়ের পাশাপাশি এর সদস্য দেশের মধ্যেও নেতৃত্বের শূণ্যতা রয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি আসিয়ানের যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়ার কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, আসিয়ান একদিকে ঐকমত এবং হস্তক্ষেপ না করার মতো মূলনীতি, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সমালোচনার মাঝখানে পড়ে গেছে। তাই আসিয়ান এ সংকটে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়াসহ এ সংকট নিরসনে সঠিক লক্ষ্য ও কৌশল নির্ধারণে হিমসিম খাচ্ছে।
এপিএইচআর বোর্ডের প্রধান মালয়শিয়ান এমপি চার্লস সান্তিয়াগো রিপোর্ট প্রকাশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মিয়ানমারের মতো মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েই আসিয়ান রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি বিবেচনা করছে। নাগরিকত্ব, ধর্মীয় অধিকার এবং ভূমি সমস্যার মতো প্রধান উদ্বগপূর্ণ ইস্যুগুলো আসিয়ান বিবেচনায় আনেনি। আসিয়ান আক্ষরিক অর্থেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। জটিল বিষয়গুলো উপেক্ষা করা হয়ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আসিয়ান সংলাপ অব্যহত রাখতে সক্ষম হয়েছে। তবে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যে সৃষ্ট সংকটে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা এবং মানবাধিকার লংঘণের তীব্রতা অনুধাবন করতে সংস্থা ব্যর্থ হয়েছে।
চার্লস সান্তিয়াগো বলেন, রাখাইন রাজ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজমান থাকা অবস্থায় আমরা কিভাবে সেখানে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা করতে পারি। রোহিঙ্গা সংকটের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে একটি গ্রহনযোগ্য সমাধান প্রনয়ণ করতে ব্যর্থতা আসিয়ানকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।এ কারণে তারা সেখানে মানবাধিকার লংঘণের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছেন না।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং আরকান আর্মির মাঝে সংঘাত বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের দেশ ছেড়ে যাবার পর পরিস্থিতি আরো অবনতি ঘটেছে।সরকার এখন বলেছে নিরাপত্তা না থাকায় রাজ্যের অনেক এলাকায় নভেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকেও ওই সব এলাকা সেখানে যাবার অনুমতি দেয়া হয় না।
সূত্র: আল জাজিরা