বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুক্ত বাণিজ্য জোট ‘আরসিইপি’ গঠন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (১৫ নভেম্বর): চীনের নেতৃত্বে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১৫টি দেশ নিয়ে গঠন করা হল বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুক্ত বাণিজ্য জোট ‘রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি)’। রোববার ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে ১০ জাতির আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইন মিটিংয়ে চীনের উদ্যোগে ‘ভার্চুয়ালি স্বাক্ষরের’ মাধ্যমে এ জোট গঠিত হয়। খবর আল জাজিরা।
অনলাইনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আরসিইপিভুক্ত দেশের নেতৃবৃন্দ তাদের বাণিজ্যমন্ত্রীর পেছনে গিয়ে দাঁড়ান এবং বাণিজ্যমন্ত্রীগণ একেএকে আরসিইপির নথি স্বাক্ষর করে তা ক্যামেরায় সামনে তুলে ধরেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জোট আসিয়ানের ১০ দেশের সঙ্গে এই জোটে চীন ছাড়াও থাকছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ড। আগামী বছরগুলোতে বাণিজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে করের হার ধারাবাহিকভাবে কমিয়ে আনাই এই জোটের লক্ষ্য।
সম্মেলনের আয়োজক ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী এনগুইয়েন শুয়ান ফাস বলেছেন, ‘আরসিইপি শিগগিরই স্বাক্ষরকারী দেশগুলোতে অনুমোদিত হবে এবং এরপর এটি কার্যকর হবে; এটি কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে অবদান রাখবে।’
ভিয়েতনাম জানিয়েছে, আরসিইপিতে বৈশ্বিক অর্থনীতির ৩০ শতাংশ, বৈশ্বিক জনগোষ্ঠীর ৩০ শতাংশ অবদান থাকবে এবং এটি ২২০ কোটি ভোক্তার কাছে পৌঁছবে।
আনুষ্ঠানিক ভাবে আরসিইপি স্বাক্ষরের প্রাক্কালে মালয়শিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ আজমিন আলি বলেছেন, দীর্ঘ আট বছর নানা কষ্ট, ত্যাগ আর চেষ্টার মাধ্যমে আলাপ আলোচনার পর আমরা এখন আরসিইপি স্বাক্ষরের দ্বারপ্রান্তে পৌছেছি। তিনি বলেন, এখনকার মতো কঠিন সময়ে নিয়ন্ত্রিত পন্থা অবলম্বন না করে আমাদের প্রত্যেকের বাজার উন্মুক্ত করে দেয়া উচিৎ। আজকের এ চুক্তি আরসিইপিভুক্ত দেশগুলোকে এ বার্তাই দিচ্ছে।
আরসিইপি জোট আগামী দিনের বিশ্ব বাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে । আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চীনের প্রভাব খর্ব করতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ১২ দেশকে নিয়ে ‘ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ’ (টিপিপি) চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সেই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে আসেন। আরসিইপি চুক্তি টিপিপির জন্য বড় ধাক্কা বলে মন্তব্য করেছে রয়টার্স। এমনকি নতুন এই জোটের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিদ্বন্দ্বী চীন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে তার অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বকে আরও মজবুত করার সুযোগ পাবে।