কৃষকদের ডাকে সর্বাত্মক বনধে অচল ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
ভারতের গাজীপুরে দিল্লি-উত্তর প্রদেশ রাজ্য সীমান্তে মঙ্গলবার কৃষকদের অবস্থান: ছবি মিড ডে অনলাইন
ঢাকা (৮ ডিসেম্বর): বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন বাতিলসহ বেশ কিছু দাবিতে কৃষকদের ডাকে সর্বাত্মক বনধে অচল হয়ে পড়েছে ভারত। নতুন এ আইন নিয়ে সরকারের সঙ্গে কৃষকদের তিনদফা আলোচনার পর মঙ্গলবারের এ বনধের ডাক দেন কৃষকরা। খবর আনন্দবাজার, বিবিসি।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালেরও বনধে যোগ দেওয়ার কথা ছিল; কিন্তু সোমবার থেকেই তাকে তার বাড়িতে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। আম আদমি পার্টি অভিযোগ করেছে যে কৃষকদের সঙ্গে সাক্ষাতের পরই তাকে গৃহবন্দি করা হয়। পাটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে কাউকে ঢুকতে বা বের হতে দেয়া হচ্ছে না।
অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে দিল্লি পুলিশ বলেছে, কোন ধরণের সংঘর্ষ প্রতিহত করতেই সেখানে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কৃষক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি কংগ্রেস, বিভিন্ন বামপন্থি দল, অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টিসহ কমপক্ষে ১৫টি বিরোধী দল এই ‘ভারত বনধ’-এ সমর্থন জানিয়ে মাঠে নেমেছে।
নতুন আইন বাতিলের দাবিতে ১২ দিন ধরে হাজার হাজার কৃষক রাজধানী দিল্লি দখল করে রেখেছে। তারা দিল্লির প্রায় সবগুলো প্রবেশ পথই অবরোধ করে রেখেছে। দিল্লির সীমান্তবর্তী চেকপোস্টগুলোতেও বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
গুজরাটে ধর্মঘটের সমর্থকরা বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। তারা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। আহমেদাবাদ-বিরামগামের সংযোগস্থলে যানবাহন আটকে বিক্ষোভ করছে কংগ্রেস দলের সমর্থকরা।
তেলঙ্গানায় পরিবহন কর্মীরাই বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে রেখেছে।
উড়িষ্যার ভুবনেশ্বর স্টেশনে রেল অবরোধ করেছেন বিভিন্ন বামপন্থি দলের কর্মী-সমর্থকরা। এই অবরোধে শামিল হয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক ও কৃষক সংগঠন।
কৃষকদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে মঙ্গলবার দিল্লিতে ট্যাক্সি না চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ড্রাইভারস অ্যাসোসিয়েশন। অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেসও দেশজুড়ে ‘চাক্কা জ্যামের’ ঘোষণা দিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেছে বামপন্থি শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অনেক এলাকায় ধর্মঘট সমর্থকদের সড়ক আটকে ক্রিকেট খেলতে দেখা গেছে।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, কৃষকদের ব্যাপক আন্দোলনের মুখে সরকার বিতর্কিত নয়া কৃষি আইন সংস্কারের প্রস্তাব দিলেও কৃষক সংগঠনগুলো তাতে রাজি না হয়ে আইনগুলো বাতিলের সুস্পষ্ট দাবি জানিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গলবারের সর্বাত্মক ধর্মঘট ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়াবে।
কৃষকদের দাবি দাওয়া নিয়ে বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে কৃষক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের ফের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।