পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লিতে কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষি আইন বাতিল দাবিতে দিল্লিতে ট্র্যাক্টর মিছিল । ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (২৬ জানুয়ারি): ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে নতুন কৃষি আইন বাতিল দাবিতে রাজধানী দিল্লিতে ট্র্যাক্টর মিছিল শুরু করেছে বিক্ষুব্ধ কৃষকরা। মঙ্গলবার প্রজাতন্ত্র দিবসে দুপুর ১২টার পর ট্র্যাক্টর মিছিল শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকাল সাড়ে ৮টার দিকেই সিংঘু সীমান্তে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে কৃষকরা। জি নিউজ, টাইমস অব ইনডিয়া।
কর্মকর্তারা বলেছেন, নিরাপত্তাকর্মীরা কৃষকদের বোঝোতে চেষ্টা করে যে, প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ শেষ হবার পর তাদেরকে ট্র্যাক্টর মিছিলের অনুমতি দেয়া হবে। কিন্তু কৃষকরা সেটা না শুনে পুলিশের ব্যরিকেড ভেঙ্গে দিল্লির দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে।
প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানীতে ট্র্যাক্টর মিছিল করার লক্ষ্যে আগে থেকেই হাজার হাজার কৃষক ট্র্যাক্টর নিয়ে সিঙ্গু এবং তিকরি সীমান্তে অবস্থান নিয়েছিল। ভোর হতেই তারা দিল্লি অভিমুখে যাত্রা শুরু করে।
কৃষকদেও ৪১টি সংগঠনের অন্যতম সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার এক সদস্য বলেছেন, যারা পুলিশের ব্যরিকেড ভেঙ্গেছে তারা কিষাণ মজদুর কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, পুলিশ অনুমতি দেয়ার পরই সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা ট্র্যাক্টর মিছিল শুরু করবে। কিষাণ মজদুর কমিটি সোমবার এক ঘোষণায় জানিয়েছে, প্রজাতন্ত্র দিবসে তারা দিল্লির ব্যস্ততম আউটার রিং রোডে ট্র্যাক্টর মিছিল করবে।
সিঙ্গু, তিকরি এবং গাজীপুর থেকে দিল্লি অভিমুখি কিষাণ গণতন্ত্র প্যারেড কে মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ কৃষকরা এখন ১ ফেব্রুয়ারি পার্লামেন্ট অভিমুখে পদযাত্রা করারও ঘোষণা দিয়েছে। বাজেট ঘোষণার ওই দিন নিজেদের দাবি নিয়ে তারা পার্লামেন্ট অভিমুখে যাত্রা করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে আনন্দবাজার জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই ট্র্যাক্টর নিয়ে রাজধানীতে ঢুকতে শুরু করেছে কৃষকরা। টিকরি সীমানার চিত্রও একই রকম। হাজার হাজার কৃষক ট্র্যাক্টর নিয়ে সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই মিছিল শুরু করে দিয়েছে।
প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন তিনটি নির্দিষ্ট পথে ট্র্যাক্টর মিছিল করার অনুমতি দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। কিন্তু মঙ্গলবার সে সব সরকারি নির্দেশনাকে উড়িয়ে সকাল সকাল মিছিল শুরু করে দেয় আন্দোলনরত কৃষকরা।
সিংঘু সীমান্তে পাঁচ হাজার কৃষকের জমায়েতের সামনে উপস্থিত সামান্য সংখ্যায় পুলিশ সদস্যরা রীতিমতো অসহায় হয়ে পড়ে।
এছাড়া পশ্চিম দিল্লির টিকরি সীমান্তেও ছবিটা কিছুটা একই রকম ছিল সকাল থেকে। যদিও সেখানে কৃষক নেতারা ঘোষণা করেন, প্রতিবাদীরা যেন শান্তি বজায় রাখে।
একাধিক সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, সকাল থেকেই হাজার হাজার কৃষক জড়ো হয়েছেন বিভিন্ন সীমান্তে। দিল্লি পুলিশ রাজপথে সরকারি প্যারেডের পর কৃষকদের মিছিল শুরু করার কথা বলছিল।
শেষ পর্যন্ত কৃষকরা সকাল থেকেই শুরু করে দিয়েছে প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদ বিক্ষোভ পরে আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
দফায় দফায় কৃষক ও নরেন্দ্র মোদি সরকারের মধ্যে বৈঠকের পরও ভারতের নয়া কৃষি আইন নিয়ে সৃষ্ট বিরোধে কোনো সমাধান আসেনি। সম্প্রতি সরকার দেড় বছরের জন্য এ আইন কার্যকর না করার প্রস্তাব দিলেও তাতে রাজি হয়নি কৃষকেরা।
এ পর্যন্ত দুই পক্ষের মাঝে ১০ দফা বৈঠক হয়েছে। সর্বশেষ বুধবার কৃষি আইন প্রত্যাহার অনড় কৃষি সংগঠনগুলোর দাবি আংশিক মেনে শেষ বৈঠকে সরকারের প্রস্তাব ছিল ওই আইন দেড় বছর কার্যকর না করার। সেই প্রস্তাবেও সায় দেয়নি কৃষক সংগঠনগুলো।