মিয়ানমারে ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (০২ ফেব্রুয়ারি): মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল ও নেতাদের আটকের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেখানে ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন। সোমবারই এক বিবৃতিতে জো বাইডেন এ হুমকি দিয়েছেন। খবর বিবিসি।
জো বাইডেন বলেছেন, জনগণের ইচ্ছাকে কখনই কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা উচিত নয়। একইসঙ্গে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের ফলাফলও প্রত্যাখ্যানের চেষ্টা করা উচিত নয়।
বাইডেন বলেন, মিয়ানমারে গণতন্ত্রের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র গত দশকে নিষেধাজ্ঞাগুলো সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে বিষয়গুলো জরুরি ভিত্তিতে পর্যালোচনা করা হবে। তিনি বলেন, যেখানেই গণতন্ত্র আক্রমণের শিকার হবে যুক্তরাষ্ট্র সেখানেই এর পক্ষে দাঁড়াবে।
একইসঙ্গে সামরিক অভ্যুত্থানে আটক অং সান সু চিসহ অন্যান্য রাজনীতিবিদদের ছেড়ে দেওয়া না হলে সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা নেওয়ার’ও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এ হুমকি মিয়ানমারের জান্তার ওপর কতটুকু প্রভাব ফেলবে সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। ডেমোক্র্যাটিক ভয়েস অব বার্মা (ডিভিবি) এর মিয়ানমার ব্যুরো প্রধান টো জাও লাট বলেছেন, জান্তা জানে যে তারা যে কাজ করেছেন তাতে অবরোধ এড়ানো যাবে না। পশ্চিমাদের আরোপিত অবরোধ নিয়ে তারা মোটেও চিন্তিত নন। তাদের ভাবনার মূল বিষয় হচ্ছে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া বিষয়টিকে কিভাবে দেখছে।
চীন এর আগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অবরোধের বিরোধিতা করেছে। তারা দেশের ভেতরের সব পক্ষকে মত বিরোধ দূর করো সমস্যা সমাধানের আহবান জানিয়েছে। কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড এবং ফিলিপাইনসহ ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশ সামরিক পদক্ষেপকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীন বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছে।
এদিকে জাতিসংঘর মহাসচিক অ্যান্টোনিও গুটেরাস মিয়ানমারের সামরিক পদক্ষেপকে গণতান্ত্রিক সংস্কারের ওপর বড় ধরনের আঘাত বলে উল্লেখ করেছেন। এ অবস্থায় নিরাপত্তা পরিষদও জরুরী বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছে। জাতিসংঘ এরই মধ্যে মিয়ানমারে আটক অন্তত ৪৫জনকে মুক্তি দেয়ার দাবী জানিয়েছে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দও মিয়ানমারের সামরিক পদক্ষেপের নিন্দা এবং উদ্বেগ জানিয়েছেন।
মিয়ানমারে সোমবার ভোরে অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ দলের সিনিয়র নেতাদের আটক করে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী।
সেনা অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতা দখলে নিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ এবং সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাং।
গত বছরের ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি নিরঙ্কুশ জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছে ৩৪৬টি আসন। সোমবার থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। তারপর থেকেই সেখানে আবার সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা দেখা দেয়।