টিকটকে সেনাসদস্যের হুঁশিয়ারি: দেখলেই কিন্তু গুলি করবো
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
মাথায় গুলি করে তোদের খুলি উড়িয়ে দেব। ছবি: রয়টার্স
ঢাকা (০৬ মার্চ): মায়ামারের সেনাসদস্য এবং পুলিশ এখন জান্তা বিরোধী বিক্ষোভকারীদের টিকটক ব্যবহার করে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। চীনের জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারের এ অ্যাপ ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের হুমকি দেয়ার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর টিকটক সেই হুমকির ভিডিও সরিয়ে ফেলেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
ডিজিটাল অধিকার রক্ষাকারীদের সংগঠন মায়ানমার আইসিটি ফর ডেভলপমেন্ট (এমআইডিও) বলেছে, বুধবার বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংস তাণ্ডবের সময় সামরিক বাহিনীর পক্ষে ৮০০ টির বেশি হুমকির ভিডিও ছাড়া হয়েছিল। সেদিন বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৩৮ জন নিহত হয়েছে বলে জাতিসংঘ দাবি করেছে।
এমআইডিও’র নির্বাহী পরিচালক তাইকে তাইকে অং এ সংখ্যার প্রসঙ্গে বলেছেন, এটা হচ্ছে বিশাল আইসবার্গের উপরাংশ মাত্র। টিকটক ব্যবহার করে শত শত সেনা এবং পুলিশ সদস্য বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিয়ে ভিডিও ছেড়েছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে অবশ্য সামরিক বাহিনী বা জান্তার পক্ষ থেকে কোন জবাব মেলেনি।
ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হাতে আসা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে পরিশ্রান্ত এক সেনাসদস্য ক্যামেরার দিকে অ্যাসল্ট রাইফেল তাক করে বিক্ষোভকারীর উদ্দেশ্যে হুঙ্কার দিচ্ছেন, ‘মাথায় গুলি করে তোদের খুলি উড়িয়ে দেব। আজ রাতে আমি গোটা শহরে টহল দেব। তখন আমি যাকে দেখব তাকেই গুলি করে মারবো। তোদের যদি মরার সাধ হয়, তাহলে আমি সেই সাধও পূরণ করে দেব।’
টিকটকে প্রকাশিত এ ভিডিওদাতার সঙ্গে অবশ্য রয়টার্স যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়নি। সেনাবাহিনীর পোশাক ছাড়া যারা বাহিনীর হয়ে এ ধরণের হুমকি দিয়ে ভিডিও ছেড়েছে, তারা আসলেই সেনাবাহিনীর সদস্য কি না সেটাও রয়টার্স নিশ্চিত করতে পারেনি।
মায়ানমারে ভয়ভীতি এবং হিংসাত্বক তথ্য ছড়াতে টিকটক এখন বেশ জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মার্কিন টেক জায়ান্ট ফেসবুক এখন মায়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ধরণের পেজের লিঙ্ক বন্ধ করে দিয়েছে। আর সেনাবাহিনীও মায়ানমারে ফেসবুক ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।
টিকটক এক বিবৃতিতে বলেছে, আমাদের গাইডলাইনে স্পষ্ট বলা রয়েছে যে, সহিংসতা উস্কে দেয় বা কারো ক্ষতির কারণ হতে পারে এমন কোন কনটেন্ট আমরা অনুমোদন করি না। মায়ানমারের সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন সব ভিডিও আমরা সরিয়ে ফেলেছি এবং আমাদের গাইডলাইন লংঘন করে এমন সব কনটেন্ট সরিয়ে ফেলতে আমরা সবসময় মনিটর করছি।
রয়টার্স এক ডজনের বেশি ভিডিও পর্যবেক্ষণ করেছে যেখানে বাহিনীর ইউনিফর্ম না পরে বিভিন্ন ব্যক্তি বন্দুক উঁচিয়ে অভ্যুত্থান বিরোধী এবং সুচির মুক্তি দাবিতে আন্দোলনকারীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। এসব ভিডিওর কোন কোনটি হাজার হাজার বার দেখা হয়েছে। এ ধরণের হুমকির ভিডিও অবশ্য গেল সপ্তাহে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এসব ভিডিওর জনপ্রিয়তা বাড়াতে কোন কোনটিতে আবার আমেরিকান তারকা হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে।
সামরিক বাহিনী মায়ানমারে ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়ার পর টিকটকের জনপ্রিয়তা হু হু করে বাড়ছে। মায়ানমারে এখন এটি শীর্ষ ২০ অ্যাপের মধ্যে অবস্থান করছে। তরুন প্রজন্মের বিক্ষোভকারীদের মধ্যেও এর জনপ্রিয়তা অনেক বেড়েছে। সেভমায়ানমার হ্যাশট্যাগ দেওয়া টিকটক কনটেন্টের ভিউ এরই মধ্যে ৮০৫ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে।
সূত্র: রয়টার্স