৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে মমতা বন্দোপাধ্যায়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: পায়ের গোড়ালি ফুলে, ডান কাঁধ ও কব্জিতে ব্যথায় চিকিৎসাধীন মমতা বন্দোপাধ্যায়
ঢাকা (১১ মার্চ): নন্দীগ্রামে নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে হামলার শিকার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়কে হাসপাতালে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে ডাক্তারা জানিয়েছেন। খবর জিনিউজ।
বুধবার রাতে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত এসএসকেএম হাসপাতাল এক মেডিকেল বুলেটিনে জানিয়েছে, মমতার বাঁ পায়ের গোঁড়ালি ফুলে গেছে। তিনি গোঁড়ালি ও পায়ের পাতায় ব্যথা পেয়েছেন। ডান কাঁধ ও কব্জিতে ব্যথা রয়েছে। তার শ্বাসকষ্টও রয়েছে। সবমিলিয়ে বুধবারের ঘটনায় কার্যত ট্রমায় আছেন মুখ্যমন্ত্রী।
চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামি ৪৮ ঘণ্টা তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। হাসপাতাল সূত্রে আরো জানা গেছে, বৃহস্পতিবার তার ইসিজি করা হতে পারে। সকালে তাঁকে চা বিস্কুট দেওয়া হয়েছে। এর আগে খালি পেটে বেশ কিছু রক্ত পরীক্ষাও করা হয়েছে।
বুধবার নন্দীগ্রামে নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে পায়ে গুরুতর আঘাত পান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেয়াপাড়ায় একটি মন্দিরে পুজো দিয়ে বের হওয়ার সময় ধাক্কাধাক্কিতে তিনি পায়ে ব্যথা পান। রাতে নন্দীগ্রামে তাঁর থাকার কথা ছিল। কিন্তু, প্রচারপর্ব অসম্পূর্ণ রেখেই কলকাতায় ফিরতে হয় তৃণমূল নেত্রীকে। গ্রীন কড়িডোর করে তাঁকে তড়িঘড়ি কলকাতায় আনা হয়।
এসএসকেএমে-র উডবার্ন ওয়ার্ডের সাড়ে ১২ নম্বর কেবিনে ভর্তি করা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এরপর বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসে এমআরআই করা হয় তাঁর। তৃণমূল নেতা চিকিৎসক শান্তনু সেন প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লিগামেন্টে আঘাত রয়েছে। সফট টিস্যু ইনজুরিতে ভুগছেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রাথমিক কিছু পরীক্ষা করার পর ডাক্তারা তাকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নন্দীগ্রামের দুর্ঘটনার পর মূখ্যমন্ত্রী বুকে ব্যথা এবং শ্বাসকষ্টের কথা জানিয়েছিলেন।
মমতার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা এক ডাক্তার পিটিআইকে বলেছেন, আগামি ৪৮ ঘণ্টা আমরা তাকে পর্যবেক্ষণ করবো। আরো বেশ কিছু পরীক্ষা নীরিক্ষা করতে হবে। তার অবস্থা পর্যালোচনা করে আমরা পরবর্তী চিকিৎসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।
মমতা বন্দোপাধ্যায়ের চিকিৎসার জন্য রাজ্য সরকার সিনিয়র ডাক্তারদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করেছে।
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, অজ্ঞাত বেশ কয়েকজন দুস্কৃতকারী তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। একে তিনি বিজেপির ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দা এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা মমতার দাবি প্রত্যাখান করে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রীর ওপর কোন ধরণের হামলার ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ভীতুরা মমতা বন্দোপাধ্যায়কে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা সেটা পারবে না। তিনি বলেন, প্রথমে রাজ্যের এডিজিকে সরিয়ে নেওয়া হল। এরপর ডিজিকে সরানো হল। আর এখন এ হামলা। আমি ভেবে অবাক হচ্ছি যে নির্বাচন কমিশন এসব করেছে, তারা কিভাবে নীরব রয়েছেন। তাদেরকেই এর দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।
বিরোধী দল বিজেপি এবং কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ এ ঘটনাকে নন্দীগ্রামের ভোটারদের সহানুভূতি পেতে মমতার রাজনৈতিক নাটক বলে উল্লেখ করেছেন।