কোভিড, বর্ণবাদ নিয়ে শেষ মুখোমুখি বিতর্কে ট্রাম্প বাইডেন
|| বিজনেস ইনসাইডার
মুখোমুখি বিতর্কে ট্রাম্প ও বাইডেন। ছবি: আল জাজিরা
ঢাকা ২৩ অক্টোবর: যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সরাসরি শেষ টেলিভিশন বিতর্কে কোভিড ও জাতিগত বৈষম্যসহ একে অপরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন প্রেসিডেন্ট ডেনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রতিপক্ষ জো বাইডেন। বৃহস্পতিবার রাতে টেনিসির নাসভিলে তাদের মধ্যে এ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এনবিসির ক্রিস্টেন ওয়েলকরের সঞ্চালনায় ৯০ মিনিটের এ বিতর্কে পরস্পরের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমনের চেয়ে বিভিন্ন বাস্তবমুখি সমস্যা নিয়ে দুজন বেশি আলোচনা করেন।
করোনা ভাইরাস নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দুজনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মত পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আবার লকডাউনের পরমর্শ দিলে কী করবেন জানতে চাইলে বাইডেন আবারো লকডাউনের বিষয়টি উড়িয়ে দেননি। বাইডেন হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন দেশ এখন একটি অন্ধকার শীতকালের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে করোনভাইরাসে ২২০,০০০ এর বেশি মার্কিন নাগরিকের মৃত্যুর জন্য বাইডেন ট্রাম্পকেই দায়ী করেন। তিনি বলেন যে ব্যক্তি এতো বিপুলসংখ্যাক মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী তার কোন অবস্থাতেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকা উচিত নয়।
তবে ট্রাম্প জোড় দিয়ে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি আর বাড়তে দেয়া উচিত হবে না। তিনি মনে করেন, বেশিরভাগ মানুষ কোভিড থেকে উত্তোরণ ঘটিয়েছেন। তাই সব কিছু আবার খুলে দেয়ার সময় এখন এসেছে। ট্রাম্প বলেন, আমেরিকা বিশাল অর্থনীতির এক বিশাল দেশ। লোকজন কাজ হারাচ্ছেন, আত্মহত্যা করছেন। তাদের হতাশা, মাদকাশক্তি, মাদক সেবন এখন এমন এক পর্যায়ে পৌছেছে যা এর আগে কখনো দেখা যায়নি। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস চলে গেছে। এর টিকাও এ বছরের শেষ নাগাদ পাওয়া যাবে। আমাদের এখন একে সঙ্গে করেই বাঁচতে হবে।
বর্ণবাদ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগের এক পর্যায়ে ট্রাম্প বলেন এই কক্ষে আমার মাঝেই সবচেয়ে কম বর্ণবাদী মনোভাব রয়েছে। তিনি এ সময় ১৯৯৪ সালের অপরাধের বিলের প্রসঙ্গ তু্লে ধরেন। ওই বিলে জো বাইডেনই খসড়া তৈরীতে সহায়তা করেছিলেন। আফ্রিকান আমেরিকানদের ব্যপকভাবে কারাবরণ করার জন্য ওই বিলকে দায়ী করা হয়ে থাকে। জবাবে বাইডেন বলেন, আধুনিক ইতিহাসে ট্রাম্পের মতো বর্ণবাদী প্রেসিডেন্ট আর কেই আসেননি। জাতিগত প্রতিটি বিষয় তিনি উস্কে দিয়েছন বলে বাইডেন অভিযোগ তোলেন।
দ্বিতীয় এ প্রেসিডেন্টশিয়াল বিতর্ক চলাকালীন মিউট বাটনের ব্যবস্থা থাকার বিষয়টি বেশ কাজে দিয়েছে বলে এখন মনে করা হচ্ছে। এবারের বিতর্কে দুজনই বেশ সংযত ছিলেন। দুজনই দুজনকে বক্তব্য রখার সুযোগ দিয়েছেন। দুজনেই একে অপরকে সম্মান করে বক্তব্য রেখেছেন। এমনকি পরস্পরকে আক্রমনের ক্ষেত্রেও তারা শান্ত এবং ভদ্রভাবে সেটা করেছেন।
ছেলের ব্যবসা বাণিজ্য থেকে বাইডেন ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন বলে ট্রাম্প জোড়লো অভিযোগ তুলেছেন। এক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে বাইডেনের ছেলে হান্টরের ব্যবসার ফাঁস হওয়া ইমেইলের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি এ ব্যাপারে মার্কিন জনগণ আপনার কাছে ব্যাখ্যার দাবিদার। পক্ষান্তরে বাইডেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অস্বচ্ছ ট্যাক্সের অভিযোগ এনে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, আমি কখনো কারো কাছ থেকে একটি পয়সাও নেইনি। নিউ ইয়র্ক টাইমসের সাম্প্রতিক রিপোর্টের কথা উল্রেখ করে বাইডেন বলেন, চীনে ট্রাম্পের ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে এবং তিনি সেখানে ২০১৩-১৫ সালে সরকারকে ১৮৮,৫৬১ ডলার ট্যাক্স দিয়েছেন। জবাবে ট্রাম্প বলেন, অনেক জায়গায় আমার অনেক ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আমি ব্যবসা করেছি।
জলবায়ু প্রশ্নে জ্বালানি নীতি নিয়ে দুজন এবারও বিতর্কে লিপ্ত হয়েছেন। ট্রাম্প বাইডেনকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি তেল শিল্পকে বন্ধ করে দিতে চান? হ্যাঁ সূচক জবাব দিয়ে বাইডেন বলেন, আমি তেল শিল্পকে রূপান্তর করতে চাই। কারণ, তেল শিল্প সাংঘাতিক ভাবে পরিবশে দূষণ করছে। তিনি বলেন বড় বড় তেল শিল্পগুলোকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে পরিণত করতে হবে। সূত্র: বিবিসি